ওয়েবসাইটের বিভিন্ন সমস্যাগুলো মধ্যে ওয়েবসাইট স্লো কাজ করা এবং লোডিং স্পিড কম হওয়া অন্যতম। বিভিন্ন কারনে এই সমস্যা গুলো হতে পারে। ওয়েবসাইটের লোডিং স্পিড কিভাবে বাড়ানো যায় এ ব্যাপারে আজকে আমরা আলোচনা করবো।
একটা ওয়েবসাইট লোডিং এর স্ট্যান্ডার্ড টাইম ধরা হয় ৩ সেকেন্ড। গুগলের মতে ৩সেকেন্ড এর মধ্যে যদি একটি ওয়েবসাইট পুরোপুরি লোড না নেয় তবে সেই ওয়েবসাইট ৩০% ভিজিটর হারায়। অর্থাৎ ওয়েবসাইটের লোডিং টাইম ৩ সেকেন্ড এর বেশি হলে ৩জনের মধ্যে ১জন ইউজার বিরক্ত হয়ে ওয়েবসাইট ভিজিট করা থেকে বিরত থাকে। এছাড়াও সার্চ ইন্জিন অপটিমাইজেশন (SEO) এর ক্ষেত্রে লোডিং স্পিড খুবই গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে থাকে। সার্চ রেজাল্টে উপরের দিকে থাকতে ওয়েবসাইটের লোডিং স্পিড বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই।
পেজ লোডিং স্পিড কিভাবে চেক করবেন
Pingdom
ওয়েবসাইট লোডিং স্পিড চেক করার জন্য সব থেকে জনপ্রিয় সাইট হলো Pingdom, এর মাধ্যমে আপনি লোডি স্পিপ এর পাশাপাশি পারফরমেন্স গ্রেড, পেজ সাইজ এবং এই ওয়বেসোইটের মাধ্যমে চেক করা অন্য ওয়েবসাইট গুলোর থেকে আপনার ওয়েবসাইট কতটা ফাস্ট তা দেখাবে। এর বাইরের ও পুরো ওয়েবসাইটের একটি পারফরমেন্স ইনসাইট ও আপনাকে দেখানো হবে। এই সব সুবিধা পাবেন আপনি একদম ফ্রি তে।
জেনে নিন, আপনার সাইটের লোডিং স্পিড কত?
Think With Google
এছাড়াও আপনি ব্যবহার করতে পারেন thinkwithgoogle এই টুলস টি। এটি মূলত গুগল এর নতুন একটি সার্ভিস যা গত বছর থেকে চালু হয়েছে thinkwithgoogle এর testmysite এর মাধ্যমে মোবাইল থেকে আপনার ওয়েবসাইট ভিজিট করতে লোডিং স্পিড কতো সেকেন্ড প্রয়োজন হয় এ ব্যাপারে জানতে পারবেন।
কি কারনে ওয়েবসাইটের লোডিং স্পিড স্লো হয় এবং সমাধান
কোনো একটি কারনে ওয়েবসাইটের লোডিং স্পিড স্লো হয় ব্যাপার টা ঠিক এমন নয়। বিভিন্ন কারনে ওয়েবসাইটের লোডিং স্পিড স্লো হতে পারে। তবে এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কারন গুলো হলো-
ভিডিও : ওয়েবসাইটের স্পীড বৃদ্ধি করুন
১. নিম্নমানের হোস্টিং ব্যবহার করা
ওয়েবসাইট লোডিং স্পিড স্লো হওয়ার অন্যতম প্রধান কারন হলো সাধারন মানের হোস্টিং ব্যবহার করা। অনেক সময় আমরা খরচ বাচানোর জন্য কম টাকায় অখ্যাত অনেক কোম্পানীর কাছ থেকে হোস্টিং কিনে ব্যবহার করে থাকি। এটি ওয়েবসাইটের লোডিং স্পিড এর উপর মারাত্বক প্রভাব ফেলে।

এ্ই ধরনের কোম্পানী গুলো সাধারনত ওভারলোডেড সার্ভার গুলো থেকে শেয়ার্ড হোস্টিং কিনে ক্লায়েন্টদের কাছে সেল করে। যার ফলে সাইট আস্তে আস্তে স্লো হয়ে যায়। তাই ওয়েবসাইট তৈরির আগেই উচিত কোনো রেপুটেডেট কোম্পানী থেকে হোস্টিং নিয়ে ব্যবহার করা। এক্ষেত্রে Hostgator, Bluehost এবং Namecheap এর মতো নামি এবং বিখ্যাত হোস্টিং কোম্পানীর সার্ভিস নেয়া যেতে পারে। তবে এক্ষেত্রে অনেক সময় পেমেন্ট ইস্যুতে সমস্যার কারনে বিদেশী হোস্টিং কোম্পানী থেকে হোস্টিং নিতে সমস্যার সম্মুখ্যীন হতে হয়।
তবে যদি আপনার কাছে পেওনিয়ার মাষ্টার কার্ড বা পেপাল থাকে, তাহলে আপনি নিজেই নিজের জন্য অনলাইন থেকে কিনুন। আর আমার পচ্ছন্দের বা আমি নিজে যে কোম্পানির হোস্টিং ব্যবহার করি সেটি ব্যবহার করতে চাইলে, নিচে দেখুন (এখানেই সবচেয়ে কমমূল্যে, সবচেয়ে ভালো হোস্টিং পাবেন)
তাই আপনার ওয়েবসাইট যদি কোনো অখ্যাত কোম্পানীর সার্ভারে হোস্ট করা থাকে এবং আপনি যদি মোটামুটি কনফার্ম হন হোস্টিং এর কারনেই সাইটের লোডিং স্পিড স্লো হচ্ছে তাহলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আপনার হোষ্টিং সার্ভার পরিবর্তন করা উচিত।
আপনার এই সমস্যা থেকে সমাধানের জন্য আমার ছোট্ট একটি প্রয়াস, আপনি চাইলে আমার প্রতিষ্ঠান থেকেও হোস্টিং নিতে পারেন, কারন, আমি অনেক কম খরচে উন্নতমানের নিরাপদ হোস্টিং দিয়ে থাকি। পেমেন্ট মেথড: বিকাশ, রকেট এবং ডিবিবিএল। ক্লিক করুন: ডোমেন-হোস্টিং অফার
২. ওয়েবসাইট ঠিক ভাবে কনফিগার না করা
ওয়বেসাইট তৈরির ক্ষেত্রে আমারা বিভিন্ন ধরনের প্লাগিনস ব্যবহার করে থাকি। এর মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ন প্লাগিনস হলো ক্যাশ প্লাগিনস। একজন ভিজিটর একটি ওয়েবসাইট ভিজিট করলে এই প্লাগিনস সেই সাইটের গুরুত্বপূর্ন কিছু ডাটা ভিজিটরের ব্রাউজারে অটোমেটিক সেভ করে রাখে। যার ফলে পরবর্তীতে ভিজিটর যখন আবার ওই সাইট টি ভিজিট করতে আসেন তখন তার ব্রাউজারে ওই সাইটির অনেক ডাটা আগে থেকেই সেভ থাকার কারনে ওয়েবসাইট লোড নিতে বেশি সময় প্রয়োজন হয় না।
আপনি আপনার ওয়বেসাইটের জন্য ক্যাশ প্লাগিনস ব্যবহার করে না থাকলে শীঘ্রই একটি প্লাগিনস ইন্সটল করে নিন।
- WP Rocket (Paid)
- WP Super Cache (Free)
- WP Fastest Cache (Free)
এগুলো ওয়াডপ্রেস এর জনপ্রিয় কয়েকটি ক্যাশ প্লাগিনস। আপনি চাইলে এখান থেকে কোনো একটি প্লাগিনস আপনার ওয়েবসাইটের জন্য ব্যবহার করতে পারেন।
৩. ইমেজ অপটিমাইজ না করা
ওয়েবসাইট লোডিং স্পিড স্লো হওয়ার আরেকটি বড় কারন পেজ সাইজ বড় হওয়া। পেজের সাইজ বড় হওয়াার ফলে পেজ লোড হতে সময় বেশি লাগে। এক্ষেত্রে পোষ্টে ব্যবহৃত ইমেজ গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে। বড় সাইজের ইমেজ ব্যহার এর ফলে এই সমস্যাটি বেশি হয়।

যেকোনো ওয়েবসাইটের জন্য আইডিয়াল ছবির ফরম্যাট JPEG ফরম্যাট। কিন্তু অনেকেই সময় PNG ফরম্যাটের ছবি ব্যবহার করে যার ফলে ওয়েবসাইটের পুরো পেজটি লোড নিতে নরমাল সময়ের থেকে বেশি সময় প্রয়োজন হয়। তাই পোষ্টে ছবি এড করার আগে ইমেজটি ভালো ভাবে অপটিমাইজ করে নিতে হবে এবং নিশ্চিত হতে হবে যে ইমেজ টি JPEG ফরম্যাটে আছে কিনা।
প্রশ্ন আসতে পারে স্টান্ডার্ড ইমেজ সাইজ কতো? সাধারনত অপটিমাইজ করা একটা ইমেজ ওয়েবসাইটে আপলোড করার জন্য 100KB এর মধ্যে হলে ভালো হয়। অর্থাৎ 100KB এর বেশি অনেকগুলি ইমেজ ওয়েব পেজ স্লো করার জন্য করান হতে পারে। তবে খেয়াল রাখতে হবে ইমেজ সাইজ ছোট করতে গিয়ে যেনো ইমেজ এর রেজুলেশন নষ্ট না হয়।
ইমেজ সাইজ ছোট করার জন্য আপনারা বিভিন্ন ইমেজ কম্প্রেশন টুল ব্যবহার করতে পারেন। নিচে এমন দুটি টুল দেয়া হলো:
- ResizeImage
- Kraken (Free & Paid, but Paid version is Best)
- ImageOptim (Free & My Favorite)
৪. ভিডিও এমবেড করা
পেজ এর সাথে কোনো ভিডিও থাকলে কোনো কোনো সময় আমরা ডিরেক্ট ওয়েব হোষ্টে আপ করে পোষ্ট দেই। এর ফলে পুরো ওয়েব পেজ টি লোড নিতে সময় প্রয়োজন হয় এর পাশাপাশি ভিডিও টি লোড নিতে আরো অতিরিক্ত সময় এর প্রয়োজন হয়। এর থেকে Youtube / Vimeo তে ভিডিও আপলোড করে লিংক পোষ্টে এমবেড করে দিলে পেজটি লোড নিতে নরমাল যতটুকু সময় লাগতো তার থেকে অনেক সময় বেচে যাবে।
৫. প্রযোজনের অতিরিক্ত প্লাগিনস ব্যবহার করা
বেশি পরিমান প্লাগিনস ব্যবহার করা ওয়েবসাইটের লোডিং স্পিড কম হওয়ার অন্যতম কারন। আমরা অনেকসময় প্রয়োজন নেই এমন অনেক প্লাগিনস সাইটে ইন্সটল করে রাখি কিংবা কাজ শেষ হলেও সেগুলো ডিলিট করি না। এই প্লাগিনস গুলো সাইটের লোডিং স্পিড কমিয়ে ফেলতে সাহায্য করে তাই ওয়েবসাইট স্মুথ এবং ফাস্ট রাখতে পরিমিত পরিমানে প্লাগিনস ব্যবহারের বিকল্প নেই।
৬. স্ক্রিপ্ট সমস্যা
স্ক্রিপ্ট সমস্যাও ওয়েবসাইটের লোডিং স্পিড স্লো হওয়ার অন্যতম একটি কারন। অনেক সময় আমরা খরচ বাচানোর জন্য অনেকে পাইরেটেড থিম ডাউনলোড করে ব্যবহার করে থাকে। যেখানে ওই থিমের স্ক্রিপ্টের কোডিং এ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থাকতে পারে। যার ফলে সাইট স্লো কাজ করে। এছাড়া পাইরেটেড থিম ব্যবহার করলে ওয়েবসাইট হ্যাকিং এর কবলে পড়ার সম্ভবনা অনেক বেশি থাকে।
আজ এখানেই শেষ করছি, এই আর্টিকেলে আমরা ওয়েবসাইট লোডিং স্পিড স্লো হওয়ার কারন এবং এর সমাধান সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ন কিছু তথ্য জানাতে পারলাম। আশাকরি এই তথ্যগুলো ভবিষৎ এ আপনাদের কাজে লাগবে।
এছাড়াও ভবিষ্যতে আপনারা কোনো ধরনের বিষয় সম্পর্কে জানতে চান কমেন্ট আপশনে আপনার মতামত জানানোর অনুরোধ রইলো। আমি চেষ্টা করবো আপনাদের মতমত অনুযায়ী পরবর্তী আর্টিকেলটি লেখার জন্য।
পুরো পোষ্টটি পড়ার জন্য সবাইকে আবারো অনেক ধন্যবাদ। দয়াকরে লেখাটি আপনার সোশ্যালে শেয়ার করুন।
ভাল লাগছে স্যার। অনেক কিছু জানতে পারলাম।
পরামর্শ ঃ ২ টা জায়গায় একটু বানান ঠিক করলে আমার কাছে মনে হয় যে আরো সুন্দর হত।
এফিলিয়েট ব্যাচ ১৬
ধন্যবাদ আপনাকে, আমি দেখছি।
অনেক গুরুত্বপূর্ণ কিছু ইনফরমেশন পেলাম স্যার। আমি যে সাইটটা করেছি সেটা মূলত পোর্টফোলিওর উদ্দেশ্যে তৈরি করা। তবে সাথে কিছু ইনফরমেটিভ লেখা থাকবে। সাইটটা খুবই ছোটো, তবে সামনে আরো পোস্ট বাড়ানোর ইচ্ছা আছে। এই ধরনের ওয়েবসাইটের জন্যও কি ক্যাশ প্লাগিনস ব্যবহার করা উচিৎ?
ধন্যবাদ আপনাকে।
না, দরকার নেই।
ধন্যবাদ স্যার, অসাধারন ৬টি উপায় আমাদেরকে উপহার দেওয়ার জন্য।
ধন্যবাদ আপনাকে
Awesome Informative post. No wonder, masterpiece as always. Very helpful for any Search Engine Optimizer.
onek kesu sikhlam…..Vai
thank you….
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ
অনেক ভালো লাগলো।
ধন্যবাদ সাব্বির।
thanks sir.
ক্যাশ প্লাগিন ব্যাবহার করলে কোনো অসুবিধা আছে….?
No, problem nai
sir Ami wapsit e r bishy new
so, kibabe siter space barano jy? plz blen!
স্পেস এর জন্য ওয়বেসোইটের হোস্টিং বাড়াতে হবে।
ধন্যবাদ স্যার খুবই হেল্পফুল, অনেক কিছু জানতে পারলাম।
হোস্টিং কোম্পানি নির্বাচণ করা আসলেই একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তবে বিদেশি হোস্টিং কোম্পানির পাশাপাশি বর্তমানে দেশীয় বিভিন্ন হোস্টিং কোম্পানিও ভালো সার্ভিস এবং সাপোর্ট প্রদান করছে। এই বিষয়টিও নতুনদের মাথায় রাখতে হবে।
ধন্যবাদ।
wow, it’s the best blog in the Bengali language.
awesome post sir, salut you,
আপনি সবসময় বেষ্ট এবং আপনার পোষ্টগুলোও বেষ্ট স্যার। আমার একটা প্রশ্ন ছিল স্যার, মনে করুন আমি একটি প্লাগিন আমার সাইটে ইনষ্টল করলাম এবং সেটা দিয়ে কাজ করলাম, কাজ করার শেষে সেই প্লাগিন আবার ডিলিট করে দিলাম তাহলে কি এই প্লাগিন দিয়ে আমি যে কাজ করেছি সেটা ( প্লাগিন দিয়ে করা কাজ ) রিমুভ হয়ে যাবে??
যেমন, wp super cache প্লাগিন দিয়ে সাইট স্পিড আপ করলাম আবার এই প্লাগিনটি ডিলিট করে দিলাম তাহলে কি আমার সাইট আগের মত হয়ে যাবে?
হা যদি এমনটি করেন তাহলে সকল কাজ হয় মুছে যাবে আর না হয় হারিয়ে যাবে।
ধন্যবাদ ভাই।
আপনাকেও ধন্যবাদ।
অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা পোষ্ট।
আপনি অনেক সুন্দর এবং গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পোষ্ট করে আমাদের অনেক সাহায্য করলেন।
স্যার, অনেকের মাঝে আপনি সঠিক ও সবথেকে বেশি তথ্য আমাদের জানতে সাহায্য করেন। এই আর্টিকেলের প্রায় সকল বিষয় আমি আমার ওয়েব সাইটে এপলাই করেছি তবুও মোবাইলে অনেক স্লো দেখাচ্ছে। বুঝতে পারছি না কি করবো ?
সাইট মোবাইলে স্লো কাজ করলে সর্ব প্রথমে এটা নিশ্চিত হয়ে নিন যে সাইটের ডেস্কটপ স্পীড বর্তমানে কত আছে আর মোবাইলে কত আছে? কম থাকলে সেটা কতটুকু কম আছে। সেটা কি আপনার হোস্টিং সমস্যা নাকি সাইটের ইন্টারনাল কোনো বিষয়। সমস্যা বের করতে পারলে তারপর সেটার সমাধান করার চেষ্টা করুন। অথবা একদমই না পারলে কোনো ডেভলোপারের সাহায্য নিতে পারেন।
ভাই কোনে ওয়েজ পেইজ থকে মুভি ডাউনলোড দিলে ডাওনলোড স্পিড স্লো হয়ে গেলে কিভাবে বাড়াবে । যেমন আমি ফিল্মিপুর বা ফিল্মিজিলা থেকে মুভি ডাউনলোড দিয়ে থাকি কিন্তু এখন স্লো ডাওনলোড হয় কি করতে পরি
এটা নির্ভর করবে আপনার ইন্টারনেট স্পীডের উপর। তাছাড়া আনুষঙ্গিক আরো কিছু ব্যাপার কাজ করে এখানে।